নির্বাচন অফিসে দূদকের অভিযান

নির্বাচন অফিসে দূদকের অভিযান

এম.এ ওমর :
বিয়ানীবাজার উপজেলা


নির্বাচন অফিসে দূর্নীতি দমন কমিশনের একটি দল অভিযান চালিয়েছে। বুধবার দুপুরে সিলেট দুদকের ৩ সদস্যের এই দলটি দাপ্তরিক নানা অনিয়মের তদন্ত করে। সাপ্তাহিক আগামী প্রজন্ম’র প্রিন্ট এবং অনলাইনে ’বিয়ানীবাজারে এনআইডি সংশোধনে দূর্ভোগ, নির্বাচন অফিসে দূর্নীতি’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রেক্ষিতে দুদকের এই অভিযান বলে জানা গেছে। দুদকের তদন্ত দলের সদস্যরা গত ১৫দিনের মধ্যে বিয়ানীবাজার নির্বাচন অফিসে এনআইডি সংশোধনে আবেদন করা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তারা নির্বাচন অফিস সরজমিন পরিদর্শন করে নানা অনিয়ম-দূর্নীতি দেখতে পান। তারা নির্বাচন অফিসের কর্মচারিদের লিখিত বক্তব্য নেন। দুদক দলের কাছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বিয়ানীবাজার শাখার সভাপতি এডভোকেট মো: আমান উদ্দিন নির্বাচন অফিসের নানা অনিয়ম, ভ‚ক্তভোগী মানুষের অসহায়ত্ব তুলে ধরেন। পরে দুদক কর্মকর্তারা নির্বাচন অফিসের হাজিরা খাতা ও গত ১৫দিনের এনআইডি সংশোধন সংক্রান্ত তথ্য জব্দ করে নিয়ে যান। বিয়ানীবাজারে জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন নিয়ে বিড়ম্বনার শেষ নেই। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই দুই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলার অসংখ্য নাগরিক। এজন্য প্রয়োজনীয় অনেক কার্যক্রম সম্পাদন করতে পারছেন না জন্ম নিবন্ধন ও এনআইডি সংশোধন করতে আগ্রহীরা।
সবচেয়ে বেশী অভিযোগ ওঠছে, জাতীয় পরিচয় সংশোধনের ক্ষেত্রে। বিয়ানীবাজারে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের জন্য নির্বাচন অফিস কার্যালয়ে দিনের পর দিন ঘুরেও সংশোধন করা সম্ভব হচ্ছেনা। একের পর এক প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ করার পরও ব্যর্থ হচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা। উপায় না পেয়ে ‘ভিন্নপথ’ অবলম্বন করলে সহজেই তা সংশোধন হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকেই। এমনকি তথ্যগত ভূলের জন্য আবেদনকারীরা তা বাতিলের জন্যও সংশ্লিষ্টদের দপ্তরে হয়রানির শিকার হতে হয়। যদিও নির্বাচন কর্মকর্তারা বলছেন, সঠিক কাগজপত্র না থাকায় সংশোধনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অনেকেই।
জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন নিয়ে সবচেয়ে বেশী বিপাকে পড়েছেন বিয়ানীবাজারের প্রবাসী কিংবা তাদের পরিবারের সদস্যরা। সংক্ষিপ্ত ছুটি নিয়ে যারা আসেন, তারা কাগজপত্র সরবরাহ করতে-করতে আবার বিদেশ চলে যান। তাদের কোন কাজই হয়না। তাদের পরিবারের সদস্যদের বিদেশ নিতে চাইলেও এনআইডি কার্ডের ভূলে বিপত্তি বাধে। এতে নির্বাচন অফিসের স্থানীয় কর্মচারিদের যোগসাজেশে কন্ট্রাক্ট করে ভূল সংশোধন করান। উপজেলার কয়েকশ’ত আবেদন বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসে আটকে থাকায় অনেকে পাসপোর্ট তৈরী করতে পারছেননা। পারিবারিক আবেদনের ক্ষেত্রেও বিদেশগামীরা অপেক্ষায় বসে আছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিয়ানীবাজার নির্বাচন অফিসে গত কয়েকমাস থেকে এনআইডি নিয়ে অনিয়ম আরো বেড়েছে। উপজেলা নির্বাচন অফিসার তপন জ্যোতি দাস অসীম যোগদানের পর থেকে দূর্নীতিও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেবাগ্রহীতারা জানান। মূলত: তাকে ম্যানেজ করেই সেবা আদায় করে নিতে হয় নাগরিকদের। অভিযোগ আছে, সেবাগ্রহীতাদের ঘন্টার পর ঘন্টা বিনা কারনে দাঁড় করিয়ে রাখেন তিনি। নিজ দপ্তরে খোশগল্পে মশগুল থাকলেও তিনি দর্শনার্থীদের সাথে সাক্ষাতে আগ্রহী হননা। কেবলমাত্র লাইন’ করে আসা সেবাগ্রহীতারা তারা দেখা পান। উপজেলা নির্বাচন অফিসার তপন জ্যোতি দাস অসীম অভিযোগের বিষয়ে বলেন, অনিয়ম-দূর্নীতর খবর সঠিক নয়। অনেকেই সঠিক কাগজপত্র না আনায় তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন হয় না। সেক্ষেত্রে তারা নানা অভিযোগ তোলেন। তবে যদি এ ধরনের সম্যসা কারো যদি থেকে থাকে তাহলে সঠিক কাগজপত্র নিয়ে এলে অবশ্যই তাদের সমস্যা সমাধান করা হবে।