বাঙ্গরায় সজীব মোল্লা হত্যা মামলার অন্যতম আসামী মেহেদী ১৫ মাস পর গ্রেফতার
স্টাফ রিপোর্টার:
বাঙ্গরায় সজীব মোল্লা হত্যা মামলার অন্যতম পলাতক আসামী মেহেদী হাসান (২৪)কে
দীর্ঘ ১৫ মাস পর গ্রেফতার করেছে বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ।
৩০ আগস্ট মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের আমিননগর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার কৃত আসামী আমিননগর গ্রামের হোসেন সিকদার এর ছেলে।
থানা সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা জেলা মুরাদনগর উপজেলা বাঙ্গরাবাজর থানাধীন রামচন্দ্রপুর থেকে কাগাতুয়া রোডে কোড়ের খাল নামক স্থানে
গত (১৯ মে ২০২২) সজিব মোল্লা (৩৪) নামে এক যুবককে কুপিয়ে জখম করে কাগাতুয়া বিলে নির্জন পুকুরে ফেলে রাখে দুর্বৃত্তরা,
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এই ঘটনার একদিন পর হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছেন বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ।
এ হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা বাঞ্ছারামপুর থানার ভুরভুরিয়া গ্রামের এরশাদ মিয়ার ছেলে সাকিব (২৫)। পরকিয়া প্রেমের জেরে সাকিব সজিবকে হত্যা করেন। মঙ্গলবার (২৪মে ২০২২)সকালে বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে বাঙ্গরা বাজার থানায় নিয়ে আসেন পুলিশ। নিহত সজিব একই গ্রামের আবুল হোসেন মোল্লার ছেলে।
এক প্রেসব্রিফিংকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মুরাদনগর- বাঙ্গরা থানা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিযুষ চন্দ্র দাস।
নিহত সজীব পেশায় একজন রাজমিস্ত্রিরীর কন্ট্রাক্টর ছিলেন । মামলার প্রধান আসামি ঘাতক সাকিব ও সজিব একই গ্রামের হওয়ায় একসাথে চলাফেরা করত।
ঘাতক সাকিব প্রতিবেশী মৃত সফিকুল ইসলামের স্ত্রী লতিফা বেগম(৫৫)নামের এক মধ্যে বয়সী নারীর সঙ্গে পরকিয়া অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে সামাজিক ভাবে গ্রাম্য শালিসির মাধ্যমে সাকিবের বিচার করে গ্রামবাসী, এ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় মাদক, জুয়া ও নারীদের নিয়ে অবৈধ কর্মকান্ডে লিপ্ত ছিল। এ বিষয় টি নিয়ে সজীব মোল্লার সাথে বিরোধের সৃষ্টি হয় ঘাতক সাকিবের ।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৯ মে সন্ধ্যায় বাড়ী থেকে ডেকে নিয়ে অটোরিকশা চালক হাসানের গাড়িতে ঘুরার কথা বলে সজিবকে নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে রাত প্রায় ৯ টার দিকে বাঙ্গরা বাজার থানাধীন বি চাপিতলা গ্রামের পূর্ব পাশে কাগাতুয়া ইন্দুরিয়া ব্রিজের উত্তর পাশে বিলের মাঝে শানু হাজীর পুকুরের দক্ষিণ পাড়ে নিয়ে আসেন এবং সেখানে আগ থেকে উৎ পেতে থাকা ঘাতকরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় ।
স্থানীয়রা খবর পেয়ে সজীবকে উদ্ধার করে প্রথমে মুরাদনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখানে অবস্থার অবনতি দেখলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু ঘটে।
এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় ২০মে সজিবের বড় ভাই মোজাম্মেল হক ডালিম বাদী হয়ে তিন জনকে নামীয় ও আরো চারজনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। চাঞ্চল্যকর এই হত্যামামলার আসামি অটোরিকশা চালক হাসনকে গ্রেফতারপূর্বক বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী দেয়। পরবর্তীতে মামলার মূল আসামি ঘাতক সাকিব বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় প্রযুক্তির সহায়তায় বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
গত ১২ জুলাই ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে
সজীব মোল্লা হত্যা মামলার ৩নং আসামি মোঃ জুলহাস (২০) কে গ্রেফতার করে
বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ,
এ বিষয়ে বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন গত ৩০ আগস্ট তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় সজীব মোল্লা হত্যা মামলার অন্যতম আসামী মেহেদী কে তার গ্রাম থেকে গ্রেফতার করি,
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উক্ত হত্যায় জড়িত অন্য আসামিদের আটক অভিযান অব্যাহত আছে।