মসজিদের ইমামের হাতে কলেজ ছাএী খুন

মসজিদের ইমামের হাতে কলেজ ছাএী খুন


সাইফুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ


গাজীপুরে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক কলেজ ছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযাগ উঠেছে এক মসজিদের ইমামের বিরুদ্ধে।

এসময় ওই ছাত্রীর মা ও এক বোনকেও কুপিয়ে আহত করেছে। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ সালনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত কলেজ ছাত্রীর নাম-রাবেয়া আক্তার (২৩)। তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফের মেয়ে। এ ঘটনায় আহত ওই কলেজ ছাত্রীর মা বিলকিস বেগম ও ছোট বোন খাদিজাকে (১৫) গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকার একটি হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) সদর থানার ওসি জিয়াউল হক জানান, সিটি করপোরশনের সদর থানাধীন দক্ষিণ সালনা এলাকার আবদুর রউফ তার স্ত্রী চার মেয়ে রাবেয়া আক্তার (২১), হাবিবা (১৮), খাদিজা (১৫) জান্নাত (১৩) ও এক ছেলেকে নিয়ে বসবাস করেন।

তিনি স্থানীয় সালনা বাজার আরএফএল প্লাস্টিক শোরুম চাকুরী করেন। তার বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তার ২০২০ সালে জয়দেবপুর সরকারী মহিলা কলেজ হতে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। মেয়েটি স্টুডেন্ট ভিসায় ইউরোপে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ভিসাসহ আনুসাঙ্গিক কার্যক্রম প্রসেসিং করতে থাকে।

তার ছোট দুই মেয়ে খাদিজা ও জান্নাতকে কোরআন শিক্ষার জন্য স্থানীয় টেকিবাড়ী জামে মসজিদের ইমাম মোঃসাইদুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়। আব্দুর রউফের ছোট দুই মেয়েকে পড়ানোর জন্য বাসায় যাওয়া- আসার সুবাদে তার বড় মেয়ে রাবেয়া আক্তারের দিক কু-নজর পড়ে মসজিদের ইমাম সাইদুল ইসলামের। কিছুদিন পর রাবেয়া আক্তারকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সাইদুল ইসলাম। রাবেয়ার পরিবার সরাসরি ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং তাকে বাসায় এসে পড়ানোর জন্য নিষেধ করে।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাবেয়াকে নানাভাবে উত্যোক্ত করতে থাকে সাইদুল ইসলাম।

সম্প্রতি লেখাপড়ার পাশাপাশি রাবেয়া স্থানীয় তেলিপাড়া এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেয়। ওই প্রতিষ্ঠানে আসা যাওয়ার পথে রাবেয়াকে উত্ত্যক্ত করত ও প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে সাইদুল। রাবেয়া বিষয়টি তার বাবা- মা'কে জানালে তারা সাইদুলকে উত্ত্যক্ত করতে পুনরায় নিষেধ করে। এতে আরও বেশি ক্ষীপ্ত হয়ে উঠে সাইদুল।

ওসি আরও জানান, সোমবার রাত সাড়ে সাতটার দিকে সাইদুল ছুরি নিয়ে রাবেয়া আক্তারের বাড়িতে যায়। সে রাবেয়ার কক্ষে ঢুকে তার মাথায়, গলায়, হাত,পায়েএলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।

এসময় আহত রাবেয়ার ডাক-চিৎকারে তার মা বিলকিস বেগম ও ছোট বোন খাদিজা দৌড়ে রাবেয়ার কক্ষে গিয়ে তাকে বাঁচানোর জন্যে
এগিয়ে গেলে তাদেরকেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায় সাইদুল।

পরে আহতদের ডাকচিৎকারে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত সাড়ে আটটার দিকে রাবেয়া আক্তারকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত নিহতের মা ও ছোট বোনকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।

তিনি জানান, এ ব্যাপারে নিহতের পিতা বাদী হয়ে সাইদুল ইসলামকে আসামি করে মঙ্গলবার সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ আসমিকে ধরতে অভিযান পরিচালনা করছে।